শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
 দৈনিক বাংলাদেশ

পিআইও র ছায়া প্রশাসক



পিআইও র ছায়া প্রশাসক
প্রতিনিধি

সরকারি কর্মচারী নয়‌ অথচ দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন‌ প্রকল্পের সব ধরনের কাজ। প্রকল্পের বিল পাস,বদলি, দাপ্তরিক কাজসহ প্রকল্পের যাবতীয় ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। এমনকি তাদের দুজনকে ছাড়া চলছেনা অফিস। প্রকল্প কর্মকর্তার বিশেষ সহকারী হিসেবে পরিচিত পাওয়া এই দুই ব্যক্তি হলেন- কুষ্টিয়া জেলার শাওন ইসলাম ও বগুড়া জেলার শাকিল আহম্মেদ রকি।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান গত বছরের ডিসেম্বর যোগদার করেই নিজ ক্ষমতা বলে ওই দুইজনকে নিয়ে আসেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিআইও অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ‘ওই দুই ব্যক্তির দাপটে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন অফিসের কর্মচারীরা। কেউ কোনো কিছু বলতে গেলেই তাকে অন্যত্র বদলির হুমকি দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। তাই ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।’

এবিষয়ে অষ্টমীর চর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য বলেন, আমার এলাকায় একটি ৪ লাখ ৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প চলমান। প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন শাওন ইসলাম। এসময় তিনি উদ্ভট আচরণ দেখিয়ে অফিসে চলে যান। পরে আমার ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে পিআইও অফিসে গেলে শাওন ইসলাম আমাদের সাথে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে এবং অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে কাজের জন্য আসা অনেক সেবাপ্রার্থী বহিরাগত ওই দুজনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে তুলেছেন অসদাচরণের অভিযোগ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে দেখা যায়, বহিরাগত ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে শাওন ইসলাম উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামানের টেবিলে চেয়ার পেতে দাপ্তরিক কাজ করছেন। ও শাকিল আহম্মেদ রকি দাপ্তরিক কাজ করছেন, কার্যসহকারী নিজামুল ইসলামের টেবিলে। শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাকে পিআইও নিয়ে এসেছেন। বিধি মোতাবেক কোনো নিয়োগ বা সরকারি ভাবে অনুমতিপত্র আমার কাছে নেই।’ 

অষ্টমীরচর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি অফিসে বহিরাগতদের দিয়ে অফিস করানো ঠিক নয়। তাছাড়া এদের আচরণে অফিসের সেবা প্রার্থীরা সন্তুষ্ট নয়। 

থানাহাট ইউনিয়নের ছোট কুষ্টারি এলাকার আমির হোসেন বলেন, প্রকল্পের কোনো কাজে অফিসে গেলেই তাদের কাছে আগে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। কেন এসেছেন, সঙ্গে এত লোকজন নিয়ে কেন, নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে।

তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজের গতি আনতেই ওই দুজনকে অন্যত্র থেকে এনে অফিসের কাজ করাচ্ছি। অফিস থেকে তাদের কোনো বেতন দেওয়া হয় না।’

এ বিষয়ে চিলমারী ইউএনও সবুজ কুমার বসাক বলেন, সরকারি কর্মচারী নীতিমালা অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বহিরাগতদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ ত্রাণ শাখায় কাজ করে কি না এমনটি আমার জানা নেই।'

আপনার মতামত লিখুন

 দৈনিক বাংলাদেশ

প্রকাশের তারিখ : ২৭ জুন ২০২৫


পিআইও র ছায়া প্রশাসক

প্রকাশের তারিখ : ২৫ মে ২০২৫

featured Image

সরকারি কর্মচারী নয়‌ অথচ দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন‌ প্রকল্পের সব ধরনের কাজ। প্রকল্পের বিল পাস,বদলি, দাপ্তরিক কাজসহ প্রকল্পের যাবতীয় ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। এমনকি তাদের দুজনকে ছাড়া চলছেনা অফিস। প্রকল্প কর্মকর্তার বিশেষ সহকারী হিসেবে পরিচিত পাওয়া এই দুই ব্যক্তি হলেন- কুষ্টিয়া জেলার শাওন ইসলাম ও বগুড়া জেলার শাকিল আহম্মেদ রকি।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান গত বছরের ডিসেম্বর যোগদার করেই নিজ ক্ষমতা বলে ওই দুইজনকে নিয়ে আসেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিআইও অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ‘ওই দুই ব্যক্তির দাপটে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন অফিসের কর্মচারীরা। কেউ কোনো কিছু বলতে গেলেই তাকে অন্যত্র বদলির হুমকি দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। তাই ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।’

এবিষয়ে অষ্টমীর চর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য বলেন, আমার এলাকায় একটি ৪ লাখ ৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প চলমান। প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন শাওন ইসলাম। এসময় তিনি উদ্ভট আচরণ দেখিয়ে অফিসে চলে যান। পরে আমার ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে পিআইও অফিসে গেলে শাওন ইসলাম আমাদের সাথে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে এবং অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে কাজের জন্য আসা অনেক সেবাপ্রার্থী বহিরাগত ওই দুজনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে তুলেছেন অসদাচরণের অভিযোগ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে দেখা যায়, বহিরাগত ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে শাওন ইসলাম উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামানের টেবিলে চেয়ার পেতে দাপ্তরিক কাজ করছেন। ও শাকিল আহম্মেদ রকি দাপ্তরিক কাজ করছেন, কার্যসহকারী নিজামুল ইসলামের টেবিলে। শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাকে পিআইও নিয়ে এসেছেন। বিধি মোতাবেক কোনো নিয়োগ বা সরকারি ভাবে অনুমতিপত্র আমার কাছে নেই।’ 

অষ্টমীরচর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি অফিসে বহিরাগতদের দিয়ে অফিস করানো ঠিক নয়। তাছাড়া এদের আচরণে অফিসের সেবা প্রার্থীরা সন্তুষ্ট নয়। 

থানাহাট ইউনিয়নের ছোট কুষ্টারি এলাকার আমির হোসেন বলেন, প্রকল্পের কোনো কাজে অফিসে গেলেই তাদের কাছে আগে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। কেন এসেছেন, সঙ্গে এত লোকজন নিয়ে কেন, নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে।

তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজের গতি আনতেই ওই দুজনকে অন্যত্র থেকে এনে অফিসের কাজ করাচ্ছি। অফিস থেকে তাদের কোনো বেতন দেওয়া হয় না।’

এ বিষয়ে চিলমারী ইউএনও সবুজ কুমার বসাক বলেন, সরকারি কর্মচারী নীতিমালা অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বহিরাগতদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ ত্রাণ শাখায় কাজ করে কি না এমনটি আমার জানা নেই।'


 দৈনিক বাংলাদেশ

সম্পাদক ও প্রকাশক :আব্দু শুক্কুর পরিচালনা সম্পাদক : ইকবাল চৌধুরী
কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক বাংলাদেশ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত