
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে র্যাব পরিচয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা অপহৃত মো. হাফিজুল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় অভিযানে অংশ নেয়া যৌথ বাহিনী অপহরণ চক্রের মূল হোতা বরখাস্ত সেনাসদস্য সুমন মুন্সিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে অস্ত্র, র্যাবের জ্যাকেট ও ওয়াকিটকি সহ একাধিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।আটককৃত মূল অপহরণকারী হলেন, মো. সুমন মুন্সি (৩২), ২০১৯ সালে বরখাস্তকৃত সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। সে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার রাজপাট পোস্টের ডুমরাকান্দি এলাকার আকবর আলী মুন্সি ও মমতাজ বেগম এর ছেলে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মামলা রয়েছে। র্যাব সুত্রে জানা যায়, গত ১১ জুন রাত ১১টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এর এ/৮ ব্লকে বসবাসরত মোঃ রহিমুল্লাহর ছেলে মোঃ হাফিজুল্লাহ (২৫) কে র্যাব পরিচয়ে অস্ত্রধারী তিনজন সন্ত্রাসী তার ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় । অপহরণকারীদের মধ্যে ছিলেন বরখাস্তকৃত সেনাসদস্য সুমন মুন্সি, সন্ত্রাসী রাকিব,ও শিকদার। স্থানীয়ভাবে এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন তাদের সহায়তা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবারের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং দুটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে তারা হুমকি দেয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলে ভিকটিমকে হত্যা করা হবে।ঘটনার পরপরই র্যাব-১৫ একটি গোয়েন্দা দল গঠন করে এবং অনুসন্ধান শুরু করে। ১৩ জুন রঙ্গিখালী ও আলিখালী পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ জুন বিকাল ২টা ৩০ টায় উখিয়ার হলদিয়াপালং মরিচ্যা বাজার এলাকা থেকে মূল অপহরণকারী বরখাস্ত সেনাসদস্য সুমন মুন্সিকে গ্রেফতার করা হয়।রবিবার (১৫ জুন) ২০২৫ খৃষ্টাব্দ সকাল ৭টায় তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ৮ এপিবিএন ও বন বিভাগের সমন্বয়ে ২৫০ জন সদস্য নিয়ে বিশাল যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানটি পরিচালিত হয় টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রঙ্গিখালী গাজীপাড়ার জংলি ফকির সাহেব নামক দুর্গম পাহাড়ি ঢালুতে। সেখান থেকে অপহৃত মো. হাফিজুল্লাহকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।অভিযানকালে আস্তানা থেকে- ১টি ওয়ান শুটার গান, ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি কালো রঙের র্যাব কোট, ১টি ওয়াকিটকি, ১টি কম্বল, ২টি পানির জারিকেন, ১টি মগ, ২টি প্লেট সহ সরঞ্জামদি উদ্ধার করা হয়েছে। একসময় সন্ত্রাসীদের আস্তানাটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলের আশপাশে আরও বেশ কয়েকটি আস্তানা নজরদারিতে রয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, র্যাবের নাম ব্যবহার করে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় সন্ত্রাসের যে নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেছে তা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অপহৃত যুবককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে সক্ষম হয়েছি। অভিযানে মূল অপহরণকারী গ্রেফতার হয়েছে, তার সাথে জড়িত অন্যান্যদেরও শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ভয়ঙ্কর অপরাধীদের কোনো ছাড় নেই। যারা র্যাবের নাম ও পোশাক অপব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে অপহরণ,প্রতারণা,অস্ত্র এবং ছদ্মবেশে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ধারায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামত আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। র্যাবের পক্ষ থেকে ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ : ২৭ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১৬ জুন ২০২৫
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে র্যাব পরিচয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা অপহৃত মো. হাফিজুল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় অভিযানে অংশ নেয়া যৌথ বাহিনী অপহরণ চক্রের মূল হোতা বরখাস্ত সেনাসদস্য সুমন মুন্সিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে অস্ত্র, র্যাবের জ্যাকেট ও ওয়াকিটকি সহ একাধিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।আটককৃত মূল অপহরণকারী হলেন, মো. সুমন মুন্সি (৩২), ২০১৯ সালে বরখাস্তকৃত সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। সে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার রাজপাট পোস্টের ডুমরাকান্দি এলাকার আকবর আলী মুন্সি ও মমতাজ বেগম এর ছেলে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মামলা রয়েছে। র্যাব সুত্রে জানা যায়, গত ১১ জুন রাত ১১টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এর এ/৮ ব্লকে বসবাসরত মোঃ রহিমুল্লাহর ছেলে মোঃ হাফিজুল্লাহ (২৫) কে র্যাব পরিচয়ে অস্ত্রধারী তিনজন সন্ত্রাসী তার ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় । অপহরণকারীদের মধ্যে ছিলেন বরখাস্তকৃত সেনাসদস্য সুমন মুন্সি, সন্ত্রাসী রাকিব,ও শিকদার। স্থানীয়ভাবে এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন তাদের সহায়তা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবারের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং দুটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে তারা হুমকি দেয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলে ভিকটিমকে হত্যা করা হবে।ঘটনার পরপরই র্যাব-১৫ একটি গোয়েন্দা দল গঠন করে এবং অনুসন্ধান শুরু করে। ১৩ জুন রঙ্গিখালী ও আলিখালী পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ জুন বিকাল ২টা ৩০ টায় উখিয়ার হলদিয়াপালং মরিচ্যা বাজার এলাকা থেকে মূল অপহরণকারী বরখাস্ত সেনাসদস্য সুমন মুন্সিকে গ্রেফতার করা হয়।রবিবার (১৫ জুন) ২০২৫ খৃষ্টাব্দ সকাল ৭টায় তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ৮ এপিবিএন ও বন বিভাগের সমন্বয়ে ২৫০ জন সদস্য নিয়ে বিশাল যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানটি পরিচালিত হয় টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রঙ্গিখালী গাজীপাড়ার জংলি ফকির সাহেব নামক দুর্গম পাহাড়ি ঢালুতে। সেখান থেকে অপহৃত মো. হাফিজুল্লাহকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।অভিযানকালে আস্তানা থেকে- ১টি ওয়ান শুটার গান, ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি কালো রঙের র্যাব কোট, ১টি ওয়াকিটকি, ১টি কম্বল, ২টি পানির জারিকেন, ১টি মগ, ২টি প্লেট সহ সরঞ্জামদি উদ্ধার করা হয়েছে। একসময় সন্ত্রাসীদের আস্তানাটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলের আশপাশে আরও বেশ কয়েকটি আস্তানা নজরদারিতে রয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, র্যাবের নাম ব্যবহার করে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় সন্ত্রাসের যে নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেছে তা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অপহৃত যুবককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে সক্ষম হয়েছি। অভিযানে মূল অপহরণকারী গ্রেফতার হয়েছে, তার সাথে জড়িত অন্যান্যদেরও শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ভয়ঙ্কর অপরাধীদের কোনো ছাড় নেই। যারা র্যাবের নাম ও পোশাক অপব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে অপহরণ,প্রতারণা,অস্ত্র এবং ছদ্মবেশে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ধারায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামত আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। র্যাবের পক্ষ থেকে ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন