মোঃমিজানুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম ||
দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট নানা সমস্যায় জর্জরিত। পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলা ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত এই জনবহুল শহরটি প্রতি বছর সরকারকে কোটি কোটি টাকার রাজস্বের ব্যবস্থা করে দিলেও এই শহরের যথাযথ গুরুত্ব বা মূল্যায়ন হচ্ছেনা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কেরানিহাটের নালা-নর্দমার বেহাল দশা ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহরটি এখন নানামুখী সমস্যা ও চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেরানীহাট বাজার এলাকায় পানি নিস্কাশনের জন্য তৈরি করা ড্রেন বা নালাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অপরিষ্কার ও ভরাট হয়ে পড়ে আছে। নিয়মিত তদারকী ও পরিষ্কারের অভাবে এসব নালা নর্দমায় জমে আছে আবর্জনা,প্লাস্টিক, ময়লা ও পঁচা দ্রব্য। ফলে বৃষ্টি হলে পানি চলাচল করতে না পেরে সড়ক ও বাজার প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বিভিন্ন যাত্রী, ক্রেতা ও বিক্রেতাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় অংশ এই কেরানীহাট বাজার থেকেই আসে। তবুও নেই তেমন কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম।পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে হয়। অনেকেই দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশের কারণে বাজারে আসতেই অনীহা প্রকাশ করেন।কেরানী হাট এর ব্যবসায়ী আলী হেসেন জানান, 'প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন মানুষ এখানে কেনাকাটা করতে আসে। কিন্তু নালার পানি ও ময়লার কারণে ক্রেতারা কষ্ট পায়। এতে আমাদের ব্যবসাও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি বাজার এলাকায় স্থাপন করা নালাগুলোও অপরিকল্পিত ও অপর্যাপ্ত। ময়লা পরিষ্কারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। দিনের পর দিন নালাগুলোতে পঁচা ও দুর্গন্ধময় পানি জমে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায় চারদিকে। এতে পথচারীরা নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলাফেরা করতে বাধ্য হয়।স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজারের উন্নয়নের জন্য একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান আজও আসেনি। বরং দিন দিন অবস্থা আরও অবনতি হচ্ছে।চট্টগ্রামের বান্দরবান সড়ক, দক্ষিণ চট্টগ্রাম, লোহাগাড়া ও পটিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত এই কেরানিহাটের অবস্থা যদি দ্রুত উন্নয়ন না করা হয়, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, কেরানীহাট এলাকায় হালকা ভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হলেও তা অপরিষ্কার থাকায় পানি নিষ্কাশন হতে পারেনা। নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে এই সমস্যা কমে আসবে। তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু প্রস্তাব নয়, বাস্তব কার্যকর পদক্ষেপই পারে কেরানিহাটের এই দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করতে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও উচিত দ্রুত মাঠে নেমে সমস্যা চিহ্নিত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করা। এই ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্রের যথাযথ পরিচর্যা না হলে রাজস্ব হারানোসহ সামগ্রিক উন্নয়নেও বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। এবিষয়ে কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা এই সমস্যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছি। সমিতির সাধারণ সভায়ও আলোচনা হয়েছে। আশা করছি একটি কার্যকর উদ্যেগ নেয়া সম্ভব হবে।এবিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমরা গত কয়েকদিন আগে উক্ত বাজারটিকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কিছু ডাস্টবিন দিয়েছি। এই বাজারের উন্নয়নে আরো কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা বিবেচনা করবো।