প্রকাশের তারিখ : ১৬ অক্টোবর ২০২৫
আদালতের নির্দেশ অমান্য: ভার্চুয়াল সাক্ষ্য গ্রহণে বাঁধা দেওয়ায় বিপাকে সাতকানিয়া থানার ওসি
আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ :
বন মামলার ভার্চুয়াল সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণে বাধা ও ন্যায় বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মাহমুদ কাওসার হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।বুধবার (১৫ অক্টোবর) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আদালতের বিচারক আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ওসি আবু মাহমুদ কাওসার হোসেন (বিপি-৭৩০৪১১১৮৩৪)-কে আজ (১৬ অক্টোবর) আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।আদালতের আদেশের অনুলিপি কক্সবাজার কোর্ট ইন্সপেক্টর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ১৭৫৬/২৫৮৪ নম্বর স্মারকে পুলিশ সদর দপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি এবং চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান বেঞ্চ সহকারী আব্দু রহিম।বন মামলার পরিচালক সুলতান মাহমুদ হাওলাদার জানান, রামু উপজেলার বন মামলা নম্বর ০৪/২০২৬-এর সাক্ষীর সাক্ষ্য অনলাইনে গ্রহণের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সাতকানিয়া থানার ওসি তা মানেননি। এ বিষয়ে আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়।আদালত সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ১৪ মে ২০২৫ তারিখে (বিচার শাখা) বিজ্ঞপ্তি নং ১৫/২৫-এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল সাক্ষ্যগ্রহণ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। তবে সাতকানিয়া থানার ওসি ওই নির্দেশনা অমান্য করে আদালত চলাকালীন সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ভার্চুয়াল সাক্ষী গ্রহণে বাধা প্রদান করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বিষয়টিকে আদালতের প্রতি ‘ধৃষ্টতা’ হিসেবে মন্তব্য করেন।বেঞ্চ সহকারী আব্দু রহিম আরও জানান, বন মামলার একমাত্র আসামি আবদুল মতলব জামিনে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একই দিন সাক্ষী এনায়েত মাওলা তালুকদারের রিকল জেরার দিন ধার্য ছিল। আদালতের নির্দেশে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে (ভার্চুয়াল) সাক্ষীকে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু সাতকানিয়া থানার ওসি উপস্থিত সাক্ষীকে ভার্চুয়ালি সাক্ষ্য দিতে বাঁধা দেন এবং জানান যে ‘তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণের কোনো পদ্ধতি নেই’।ওসি আদালতের সঙ্গে যোগাযোগের সময় অশোভন আচরণও করেন বলে জানা গেছে। আদালত বিষয়টিকে ন্যায়বিচারে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করে দি পেনাল কোড, ১৮৬০ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।ওসি আবু মাহমুদ কাওসার হোসেন জানায়, সরকারি বক্তব্য মোবাইলে না দিলে হয় না। সাক্ষী নিব না কেন—এটা ভুল হয়ে গেছে।এদিকে আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট প্রতিভা দাশও ওসি কর্তৃক সাক্ষ্য অনলাইনে গ্রহণে বাধা দেওয়ার বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।
কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক বাংলাদেশ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত